সংখ্যা পদ্ধতি (Number System)

- তথ্য প্রযুক্তি - কম্পিউটার (Computer) | | NCTB BOOK

সংখ্যা পদ্ধতি হলো এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে আমরা সংখ্যা লিখি, পড়ি এবং গাণিতিক কাজ সম্পাদন করি। বিভিন্ন ধরনের সংখ্যা পদ্ধতি রয়েছে, এবং প্রতিটি পদ্ধতি নির্দিষ্ট ধরনের ভিত্তি বা র‌্যাডিক্স (Base) ব্যবহার করে। সংখ্যা পদ্ধতিগুলি আমাদের দৈনন্দিন গাণিতিক কার্যক্রম এবং কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কয়েকটি প্রধান সংখ্যা পদ্ধতির বর্ণনা দেওয়া হলো:

১. দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি (Decimal Number System)

  • ভিত্তি (Base): ১০
  • সংখ্যা: ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯
  • বর্ণনা:
    • দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি হলো সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত সংখ্যা পদ্ধতি এবং এটি দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করা হয়।
    • এটি ১০টি সংখ্যা ব্যবহার করে (০ থেকে ৯) এবং এটি দশমিক ভিত্তিক হওয়ার কারণে একে ভিত্তি-১০ পদ্ধতি বলা হয়।
    • উদাহরণ: ২৫৩, ৪৬.৭৫

২. বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি (Binary Number System)

  • ভিত্তি (Base): ২
  • সংখ্যা: ০ এবং ১
  • বর্ণনা:
    • বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি হলো কম্পিউটার এবং ডিজিটাল ডিভাইসের মধ্যে ব্যবহৃত প্রধান সংখ্যা পদ্ধতি।
    • এতে দুটি সংখ্যা (০ এবং ১) ব্যবহার করা হয়, যা বিদ্যুতের উপস্থিতি (১) বা অনুপস্থিতি (০) দ্বারা নির্দেশিত হয়।
    • কম্পিউটার বাইনারি কোড ব্যবহার করে সব ধরনের তথ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং সঞ্চয় করে।
    • উদাহরণ: ১০১০, ১১১১

৩. অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতি (Octal Number System)

  • ভিত্তি (Base): ৮
  • সংখ্যা: ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭
  • বর্ণনা:
    • অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতি ৮টি সংখ্যা (০ থেকে ৭) ব্যবহার করে এবং এটি কম্পিউটার সিস্টেমে বিশেষত প্রাচীন সময়ে ব্যবহৃত হতো।
    • বাইনারি সংখ্যার বড় মান সহজে উপস্থাপন করার জন্য অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়, কারণ প্রতিটি অক্টাল সংখ্যার তিনটি বাইনারি সংখ্যা দ্বারা উপস্থাপন করা যায়।
    • উদাহরণ: ১৭৫, ২৩

৪. হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি (Hexadecimal Number System)

  • ভিত্তি (Base): ১৬
  • সংখ্যা: ০-৯ এবং A-F (যেখানে A=10, B=11, C=12, D=13, E=14, F=15)
  • বর্ণনা:
    • হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি ১৬টি সংখ্যা (০ থেকে ৯ এবং A থেকে F) ব্যবহার করে।
    • কম্পিউটারের মেমোরি অ্যাড্রেস এবং বড় বাইনারি সংখ্যাগুলি সহজে উপস্থাপনের জন্য এটি ব্যবহৃত হয়, কারণ প্রতিটি হেক্সাডেসিমাল সংখ্যার চারটি বাইনারি সংখ্যা থাকে।
    • উদাহরণ: 2F, 1A3

সংখ্যা পদ্ধতির রূপান্তর:

সংখ্যা পদ্ধতির মধ্যে রূপান্তর প্রায়ই কম্পিউটার বিজ্ঞানে ব্যবহৃত হয়। নিচে কয়েকটি সাধারণ রূপান্তর পদ্ধতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো:

দশমিক থেকে বাইনারি রূপান্তর:

  • দশমিক সংখ্যা থেকে বাইনারি সংখ্যা পাওয়ার জন্য দশমিক সংখ্যাকে ২ দিয়ে ভাগ করতে হয় এবং ভাগশেষগুলোকে বিপরীত ক্রমে সাজাতে হয়।

বাইনারি থেকে দশমিক রূপান্তর:

  • বাইনারি সংখ্যাকে দশমিক সংখ্যায় রূপান্তর করতে প্রতিটি বাইনারি সংখ্যাকে তার অবস্থানের ভিত্তিতে গুণ করতে হয় এবং সব গুণফল যোগ করতে হয়।

দশমিক থেকে হেক্সাডেসিমাল রূপান্তর:

  • দশমিক সংখ্যাকে ১৬ দিয়ে ভাগ করে ভাগশেষগুলো ব্যবহার করা হয় এবং সেগুলো বিপরীত ক্রমে সাজানো হয়।

হেক্সাডেসিমাল থেকে বাইনারি রূপান্তর:

  • প্রতিটি হেক্সাডেসিমাল সংখ্যাকে তার সমতুল্য ৪-বিট বাইনারি সংখ্যায় রূপান্তর করতে হয়।

সংখ্যা পদ্ধতির গুরুত্ব:

  • গণিত ও বিজ্ঞান: সংখ্যা পদ্ধতি গণিত ও বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে জটিল হিসাব এবং বিশ্লেষণের জন্য অপরিহার্য।
  • কম্পিউটার ও প্রযুক্তি: কম্পিউটার এবং ডিজিটাল ডিভাইসের কার্যপ্রণালী সম্পূর্ণরূপে বাইনারি এবং অন্যান্য সংখ্যা পদ্ধতির উপর নির্ভরশীল। বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রামিং এবং ডেটা প্রক্রিয়াকরণে এই সংখ্যা পদ্ধতির জ্ঞান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • ডিজিটাল কমিউনিকেশন: ডিজিটাল যোগাযোগ এবং ডেটা এনকোডিং/ডিকোডিংয়ের জন্য বাইনারি এবং হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতির ব্যবহার অপরিহার্য।

সংক্ষেপে, সংখ্যা পদ্ধতি হলো একটি মৌলিক ধারণা, যা আমাদের দৈনন্দিন গাণিতিক কাজ, কম্পিউটার বিজ্ঞান, এবং প্রযুক্তির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

Content updated By

সংখ্যা আবিষ্কারের ইতিহাস

সংখ্যার আবিষ্কারের ইতিহাস মানব সভ্যতার বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। সংখ্যা গণনা, পরিমাপ, এবং ব্যবসায়িক কাজ সম্পাদনের জন্য একটি অপরিহার্য উপাদান হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতিহাসে বিভিন্ন সময়ে এবং বিভিন্ন সভ্যতায় সংখ্যার উদ্ভাবন ও বিকাশ ঘটেছে, যা পরবর্তীতে গণিতের জগতে নতুন নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।

প্রাচীন সভ্যতায় সংখ্যার উদ্ভাবন:

১. সুমেরীয় সভ্যতা (প্রায় ৪০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ):

  • সুমেরীয়রা আধুনিক ইরাকের মেসোপটেমিয়ায় বাস করত এবং তাদের গণনাপদ্ধতি ছিল বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন।
  • তারা একটি সেক্সাজেসিমাল (৬০-ভিত্তিক) সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করত, যা আমরা এখনো ঘন্টা, মিনিট, এবং কোণের মাপে ব্যবহার করি।
  • সুমেরীয়রা কাদার ফলকে খোদাই করে সংখ্যাগুলি চিহ্নিত করত এবং এর মাধ্যমে তারা পরিমাপ, ব্যবসা, এবং কর সংগ্রহের কাজ সম্পাদন করত।

২. মিশরীয় সভ্যতা (প্রায় ৩০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ):

  • মিশরীয়রা একটি দশমিক (১০-ভিত্তিক) সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করত। তাদের সংখ্যাগুলো হায়ারোগ্লিফের মাধ্যমে প্রকাশিত হতো এবং প্রতিটি সংখ্যা একটি নির্দিষ্ট প্রতীকের সাহায্যে প্রকাশ করা হতো।
  • মিশরীয়রা দৈনিক জীবনের বিভিন্ন কাজে, যেমন জমির মাপজোক, কর সংগ্রহ, এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রমে এই সংখ্যা ব্যবহার করত।

৩. মায়া সভ্যতা (প্রায় ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ):

  • মায়ারা ২০-ভিত্তিক (ভিজেসিমাল) সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করত। তাদের সংখ্যা পদ্ধতিতে বিন্দু এবং বার লাইনের মাধ্যমে সংখ্যা প্রকাশ করা হতো।
  • তারা জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং ক্যালেন্ডার গণনায় বিশেষভাবে দক্ষ ছিল এবং সংখ্যার মাধ্যমে তারা মহাকাশের গতিবিধি বিশ্লেষণ করত।

প্রাচীন গ্রীক ও রোমান সংখ্যা পদ্ধতি:

  • গ্রীক সংখ্যা পদ্ধতি: গ্রীকরা অক্ষর ব্যবহার করে সংখ্যা প্রকাশ করত। তাদের সংখ্যা পদ্ধতি ছিল গ্রীক বর্ণমালার ওপর ভিত্তি করে, যেখানে প্রতিটি সংখ্যা একটি নির্দিষ্ট অক্ষরের সাহায্যে প্রকাশ করা হতো।
  • রোমান সংখ্যা পদ্ধতি: রোমানরা সংখ্যা প্রকাশে তাদের নিজস্ব পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছিল, যা রোমান সংখ্যা (I, V, X, L, C, D, M) হিসেবে পরিচিত। এই সংখ্যা পদ্ধতি প্রাচীন রোমে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো এবং পরবর্তীতে মধ্যযুগের ইউরোপে প্রভাবশালী ছিল।

হিন্দু-আরবিক সংখ্যা পদ্ধতি:

ভারতে সংখ্যার উদ্ভাবন (প্রায় ৫০০ খ্রিস্টাব্দ):

  • ভারতে প্রাচীন গণিতবিদরা দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি (০ থেকে ৯) এবং শূন্য (০) উদ্ভাবন করেন, যা হিন্দু-আরবিক সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি স্থাপন করে। ভারতীয় গণিতবিদ আর্যভট্ট এবং ব্রহ্মগুপ্ত এই পদ্ধতির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
  • শূন্যের ধারণা ছিল একটি বিপ্লবী উদ্ভাবন, কারণ এটি গণনা, অঙ্ক, এবং গাণিতিক অপারেশনকে সহজ করে তোলে এবং পরবর্তী সময়ে গণিতের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনে।

আরব বিশ্বে সংখ্যার প্রসার:

  • ভারতীয় সংখ্যার পদ্ধতি আরবদের মাধ্যমে ইউরোপে পৌঁছায়। মুসলিম গণিতবিদ আল-খারিজমি এই সংখ্যা পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে গণিতের বিভিন্ন সূত্র এবং পদ্ধতি তৈরি করেন। তার নাম থেকেই "Algorithm" শব্দটি এসেছে।
  • আরবরা ভারতীয় সংখ্যা পদ্ধতি গ্রহণ করে এবং এটি আরবিক সংখ্যার নামে পরিচিত হয়, যা পরবর্তীতে ইউরোপে এবং সারা বিশ্বে প্রচলিত হয়।

ইউরোপে হিন্দু-আরবিক সংখ্যা পদ্ধতির বিস্তার:

  • ১২০২ সালে ইতালীয় গণিতবিদ লিওনার্দো ফিবোনাচ্চি তার বিখ্যাত বই "Liber Abaci" প্রকাশ করেন, যেখানে তিনি হিন্দু-আরবিক সংখ্যা পদ্ধতি এবং দশমিক পদ্ধতির ব্যবহার ও প্রয়োগ ব্যাখ্যা করেন। তার বইয়ের মাধ্যমে ইউরোপে এই সংখ্যা পদ্ধতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
  • হিন্দু-আরবিক সংখ্যা পদ্ধতি গণিতের সমস্ত শাখায় ব্যবহার সহজ করে এবং এটি আধুনিক গণিতের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।

আধুনিক সংখ্যার পদ্ধতি এবং প্রয়োগ:

  • আধুনিক যুগে সংখ্যার পদ্ধতির বিকাশ এবং পরিমার্জনের ফলে ডিজিটাল কম্পিউটার, ক্যালকুলেটর, এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রে সংখ্যা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
  • সংখ্যা পদ্ধতির মাধ্যমে ইঞ্জিনিয়ারিং, ফিনান্স, বিজ্ঞান, এবং অন্যান্য ক্ষেত্রের জন্য জটিল হিসাব এবং বিশ্লেষণ সম্ভব হয়েছে।

সারসংক্ষেপ:

সংখ্যার উদ্ভাবন এবং বিকাশ মানব সভ্যতার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। সুমেরীয়, মিশরীয়, মায়া, গ্রীক, এবং ভারতীয় সভ্যতা সংখ্যার পদ্ধতি এবং ধারণার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। বিশেষত, ভারতীয় হিন্দু-আরবিক সংখ্যা পদ্ধতি এবং শূন্যের উদ্ভাবন গণিত এবং বিজ্ঞানের ইতিহাসে একটি বিপ্লব সৃষ্টি করে, যা আজকের আধুনিক গণনা এবং প্রযুক্তির ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।

Content added By
Content updated By

চিহ্নযুক্ত সংখ্যা

চিহ্নযুক্ত সংখ্যা (Signed Number) হলো একটি সংখ্যা যা তার চিহ্ন (সাইন) দিয়ে নির্দেশ করে যে এটি একটি ধনাত্মক (positive) বা ঋণাত্মক (negative) সংখ্যা। গণিত এবং কম্পিউটার বিজ্ঞানে চিহ্নযুক্ত সংখ্যা ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে গাণিতিক গণনা এবং ডেটা উপস্থাপনার ক্ষেত্রে।

চিহ্নযুক্ত সংখ্যার প্রকারভেদ:

১. ধনাত্মক সংখ্যা (Positive Number):

  • এই সংখ্যাগুলোর আগে "+" চিহ্ন থাকে, তবে সাধারণত "+" চিহ্নটি উল্লেখ না করলেও সংখ্যাটি ধনাত্মক হিসেবে ধরা হয়।
  • উদাহরণ: +5 বা শুধুমাত্র 5।

২. ঋণাত্মক সংখ্যা (Negative Number):

  • এই সংখ্যাগুলোর আগে "-" চিহ্ন থাকে, যা নির্দেশ করে যে সংখ্যাটি শূন্যের (0) চেয়ে কম।
  • উদাহরণ: -3, -7, -15।

চিহ্নযুক্ত সংখ্যার ব্যবহারের ক্ষেত্র:

১. গণিত:

  • চিহ্নযুক্ত সংখ্যা গণিতে যোগ, বিয়োগ, গুণ, এবং ভাগ করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
  • উদাহরণ: -5 + 7 = 2 বা 8 - (-3) = 11।

২. তাপমাত্রা:

  • তাপমাত্রা নির্দেশ করতে চিহ্নযুক্ত সংখ্যা ব্যবহার করা হয়। যেমন, শূন্যের নিচের তাপমাত্রা নির্দেশ করতে ঋণাত্মক সংখ্যা ব্যবহার করা হয় (যেমন, -10 ডিগ্রি সেলসিয়াস)।

৩. উচ্চতা এবং গভীরতা:

  • সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে বা নিচে অবস্থান নির্দেশ করতে চিহ্নযুক্ত সংখ্যা ব্যবহার করা হয়।
  • উদাহরণ: সমুদ্র পৃষ্ঠের উপরে কোনো উচ্চতা ধনাত্মক এবং নিচে কোনো গভীরতা ঋণাত্মক হিসেবে নির্দেশিত হয় (যেমন, +200 মিটার বা -150 মিটার)।

কম্পিউটার বিজ্ঞানে চিহ্নযুক্ত সংখ্যা:

কম্পিউটারে চিহ্নযুক্ত সংখ্যা উপস্থাপনের জন্য দুটি পদ্ধতি সাধারণত ব্যবহৃত হয়:

১. টু’স কমপ্লিমেন্ট (Two’s Complement):

  • এটি চিহ্নযুক্ত সংখ্যা উপস্থাপনার একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি, যেখানে ধনাত্মক সংখ্যা সাধারণভাবে এবং ঋণাত্মক সংখ্যা একটি কমপ্লিমেন্ট পদ্ধতি ব্যবহার করে উপস্থাপন করা হয়।
  • এই পদ্ধতি কম্পিউটারে যোগ এবং বিয়োগ সহজ করে এবং ত্রুটি কমায়।

২. সাইন-ম্যাগনিটিউড (Sign-Magnitude):

  • এই পদ্ধতিতে প্রথম বিট চিহ্ন হিসেবে ব্যবহার করা হয় (0 ধনাত্মক, 1 ঋণাত্মক) এবং বাকি বিটগুলো সংখ্যা নির্দেশ করে।
  • উদাহরণ: 1001 হতে পারে -1 এবং 0001 হতে পারে +1।

চিহ্নযুক্ত সংখ্যার নিয়ম:

১. ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক সংখ্যার যোগ:

  • ধনাত্মক সংখ্যা এবং ঋণাত্মক সংখ্যার যোগ করার সময় সেগুলির চিহ্নের ওপর ভিত্তি করে গণনা করা হয়। উদাহরণ: -5 + 3 = -2।

২. ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক সংখ্যার গুণ:

  • ধনাত্মক সংখ্যা এবং ঋণাত্মক সংখ্যার গুণ করলে ফলাফল ঋণাত্মক হয়। উদাহরণ: -4 × 6 = -24।
  • দুই ধনাত্মক সংখ্যার গুণ বা দুই ঋণাত্মক সংখ্যার গুণ ধনাত্মক হয়। উদাহরণ: -3 × -2 = 6।

চিহ্নযুক্ত সংখ্যার ব্যবহারিক প্রয়োগ:

  • ব্যাংকিং: ঋণাত্মক সংখ্যা ব্যাংকিং ক্ষেত্রে ঋণের পরিমাণ নির্দেশ করতে ব্যবহৃত হয়, এবং ধনাত্মক সংখ্যা জমার পরিমাণ নির্দেশ করে।
  • বিজ্ঞান: পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, এবং অন্যান্য বিজ্ঞান শাখায় চিহ্নযুক্ত সংখ্যা ব্যবহৃত হয় তাপমাত্রা, গতিবেগ, শক্তি, এবং অন্যান্য পরিমাপের ক্ষেত্রে।
  • অর্থনীতি: লাভ এবং ক্ষতির পরিমাণ নির্দেশ করতে চিহ্নযুক্ত সংখ্যা ব্যবহৃত হয়।

চিহ্নযুক্ত সংখ্যা বাস্তব জীবন এবং তাত্ত্বিক ক্ষেত্র উভয় ক্ষেত্রেই একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা, যা বিভিন্ন গণনা, পরিমাপ, এবং উপস্থাপনায় ব্যবহৃত হয়।

Content added By
Content updated By

আন-সাইনড নম্বর

আন-সাইনড নম্বর হলো একটি বাইনারি সংখ্যার প্রকার, যা শুধুমাত্র ধনাত্মক (Positive) সংখ্যা বা শূন্য (0) প্রকাশ করতে সক্ষম। এটি কম্পিউটার সিস্টেমে ব্যবহৃত হয় যেখানে সাইনড (Signed) অর্থাৎ ধনাত্মক বা ঋণাত্মক (Negative) উভয় সংখ্যা প্রকাশ করার প্রয়োজন নেই। আন-সাইনড সংখ্যাগুলিতে প্রতিটি বিট সংখ্যা মানের প্রতিনিধিত্ব করে, এবং কোনো বিট সাইন (ধনাত্মক বা ঋণাত্মক নির্দেশক) হিসেবে ব্যবহৃত হয় না।

আন-সাইনড নম্বরের বৈশিষ্ট্য:

  • শুধুমাত্র ধনাত্মক সংখ্যা: আন-সাইনড নম্বরগুলিতে শুধুমাত্র ধনাত্মক সংখ্যা (0 বা ধনাত্মক মান) থাকতে পারে।
  • মোট সংখ্যা ক্ষমতা বেশি: সাইনড সংখ্যার তুলনায় আন-সাইনড সংখ্যাগুলির জন্য বাইনারি বিটগুলির ব্যবহার পূর্ণাঙ্গ মানের জন্য করা হয়, ফলে একই আকারের সাইনড সংখ্যার তুলনায় আন-সাইনড সংখ্যায় বড় মান ধারণ করা যায়।
  • বিট ব্যবহারের ক্ষমতা: এক বাইট (8 বিট) আকারের একটি আন-সাইনড সংখ্যা 0 থেকে 255 পর্যন্ত মান ধারণ করতে পারে, কারণ প্রতিটি বিট 0 বা 1 হতে পারে এবং সাইন নির্দেশক কোনো বিট বরাদ্দ করা হয় না।

উদাহরণ:

ধরা যাক, ৮-বিটের একটি আন-সাইনড বাইনারি সংখ্যা:

  • সর্বনিম্ন মান: 00000000 = 0 (ডেসিমেল)
  • সর্বোচ্চ মান: 11111111 = 255 (ডেসিমেল)

এই ৮-বিট আকারে একটি সাইনড সংখ্যা যেখানে ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক মান সমর্থিত, সেখানে সীমা হয় -১২৮ থেকে +১২৭। কিন্তু আন-সাইনড সংখ্যার ক্ষেত্রে সীমা হয় 0 থেকে 255।

আন-সাইনড নম্বরের ব্যবহার:

  • মেমোরি ঠিকানা: কম্পিউটার সিস্টেমে মেমোরি ঠিকানাগুলো সবসময় ধনাত্মক হয়, তাই সেখানে আন-সাইনড সংখ্যার ব্যবহার করা হয়।
  • বর্ণ কোডিং: ASCII কোডিং বা অন্যান্য বর্ণ মানের ক্ষেত্রে আন-সাইনড সংখ্যা ব্যবহৃত হয়।
  • কাউন্টার এবং ইনডেক্স: লুপ কাউন্টার, ইনডেক্স, এবং অন্যান্য কাজ যেখানে মান সবসময় ধনাত্মক হবে, সেখানে আন-সাইনড সংখ্যা প্রায়ই ব্যবহৃত হয়।

আন-সাইনড নম্বর ব্যবহারের মাধ্যমে পূর্ণ বিট প্রস্থের (Bit Width) সুবিধা পাওয়া যায় এবং এটি নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা হয় যেখানে কেবল ধনাত্মক মান প্রয়োজন।

Content added By

কোড

কোড (Code) হলো এমন একটি ভাষা বা সংকেত, যা কম্পিউটার বা অন্যান্য ডিভাইসের জন্য নির্দিষ্ট নির্দেশনা বা তথ্য উপস্থাপন করতে ব্যবহৃত হয়। কোড সাধারণত কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ভাষায় লেখা হয়, যা মানুষের ভাষাকে মেশিন বা কম্পিউটারের বোধগম্য ভাষায় অনুবাদ করে। কোড লেখার প্রক্রিয়াকে প্রোগ্রামিং বলা হয়, এবং এটি সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট, অ্যাপ্লিকেশন, এবং অন্যান্য প্রযুক্তি তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয়।

কোডের প্রকারভেদ:

কোড সাধারণত বিভিন্ন রকমের হতে পারে, যেমন প্রোগ্রামিং কোড, এনক্রিপশন কোড, এবং যোগাযোগ কোড। নিচে কোডের বিভিন্ন ধরন এবং তাদের বিবরণ দেওয়া হলো:

১. প্রোগ্রামিং কোড:

  • প্রোগ্রামিং কোড হলো এমন কোড, যা কম্পিউটারে নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করার নির্দেশনা প্রদান করে। প্রোগ্রামিং ভাষায় কোড লেখা হয়, এবং এটি সফটওয়্যার বা প্রোগ্রাম তৈরির জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • উদাহরণ: Python, Java, C++, JavaScript, HTML, CSS।
  • ব্যবহার:
    • ওয়েবসাইট এবং ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে (যেমন, HTML, CSS, JavaScript)।
    • সফটওয়্যার এবং ডেস্কটপ অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করতে (যেমন, C++, Java)।
    • গেম ডেভেলপমেন্ট, ডেটা সায়েন্স, এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জন্য (যেমন, Python)।

২. এনক্রিপশন কোড:

  • এনক্রিপশন কোড হলো এমন কোড, যা তথ্য এনক্রিপ্ট বা এনকোড করে এবং নিরাপদ যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হয়।
  • এই কোড তথ্যকে একটি বিশেষ সংকেত বা ফর্মে রূপান্তরিত করে, যাতে শুধুমাত্র অনুমোদিত ব্যক্তি বা সিস্টেম তা ডিকোড করতে পারে।
  • উদাহরণ: AES (Advanced Encryption Standard), RSA, এবং SHA (Secure Hash Algorithm)।
  • ব্যবহার:
    • অনলাইন লেনদেন এবং যোগাযোগকে নিরাপদ করতে।
    • তথ্য এনক্রিপ্ট করা এবং সাইবার সিকিউরিটির জন্য।
    • সিস্টেম এবং নেটওয়ার্কের মধ্যে নিরাপদ ডেটা ট্রান্সমিশন।

৩. যোগাযোগ কোড:

  • যোগাযোগ কোড হলো এমন সংকেত বা সংকেতের সংমিশ্রণ, যা যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি অডিও, ভিজ্যুয়াল বা ডিজিটাল সংকেত হতে পারে।
  • উদাহরণ: মর্স কোড, ASCII (American Standard Code for Information Interchange), এবং বিট কোড।
  • ব্যবহার:
    • রেডিও যোগাযোগ এবং সামরিক যোগাযোগের জন্য (মর্স কোড)।
    • কম্পিউটারের মাধ্যমে টেক্সট এবং ডেটা এনকোডিং (ASCII)।
    • ডিজিটাল যোগাযোগ এবং তথ্য প্রক্রিয়াকরণের জন্য।

প্রোগ্রামিং কোডের উদাহরণ:

নিচে বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ভাষায় লেখা কোডের উদাহরণ দেওয়া হলো:

Python:

  • এখানে Python ভাষায় একটি সাধারণ কোড লেখা হয়েছে, যা "Hello, World!" প্রিন্ট করে।

print("Hello, World!")

JavaScript:

  • এটি একটি JavaScript কোড, যা ব্রাউজারের কনসোলে "Hello, World!" আউটপুট দেয়।

console.log("Hello, World!");

HTML:

  • HTML ভাষায় লেখা একটি কোড, যা ওয়েবপেজে "Hello, World!" প্রদর্শন করে।

<h1>Hello, World!</h1>

C++:

  • এটি C++ ভাষায় লেখা একটি কোড, যা "Hello, World!" প্রিন্ট করে।

#include <iostream> using namespace std; int main() {    cout << "Hello, World!" << endl;    return 0; }

কোড লেখার গুরুত্ব:

  • সফটওয়্যার এবং অ্যাপ্লিকেশন তৈরি: কোড সফটওয়্যার এবং অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করার মূল উপাদান। বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ভাষার সাহায্যে সফটওয়্যার ডেভেলপাররা নতুন প্রোগ্রাম তৈরি করে।
  • ডিজিটাল কমিউনিকেশন: কম্পিউটার এবং ডিভাইসগুলোর মধ্যে যোগাযোগের জন্য কোড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন প্রোটোকল এবং কোডের মাধ্যমে ডেটা ট্রান্সফার এবং প্রক্রিয়াকরণ করা হয়।
  • স্বয়ংক্রিয়তা এবং অটোমেশন: কোড ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন কাজ স্বয়ংক্রিয় করা যায়, যা ব্যবসা এবং শিল্পক্ষেত্রে কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং সময় বাঁচায়।
  • সাইবার সিকিউরিটি: কোড ব্যবহার করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করা যায়, যা সাইবার আক্রমণ এবং তথ্য চুরির থেকে সুরক্ষা প্রদান করে।

সারসংক্ষেপ:

কোড হলো কম্পিউটার এবং প্রযুক্তির একটি মৌলিক উপাদান, যা প্রোগ্রামিং, এনক্রিপশন, এবং যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি সফটওয়্যার তৈরি এবং ডিজিটাল যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রোগ্রামিং এবং এনক্রিপশন কোডের মাধ্যমে কম্পিউটার সিস্টেম, অ্যাপ্লিকেশন, এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করা যায়।

Content added By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

128 different characters
256 different characters
1024 different characters
512 different characters
American Standard Code for Information Interchange
American Stock Code for Information Interchange
American Standard Code for Information Interfere
None

BCD

বিসিডি কোড (BCD Code) বা Binary-Coded Decimal হলো একটি পদ্ধতি যেখানে দশমিক সংখ্যাগুলিকে বাইনারি আকারে প্রকাশ করা হয়, কিন্তু প্রতিটি দশমিক সংখ্যা (০-৯) আলাদা করে ৪-বিট বাইনারি কোডে পরিবর্তিত হয়। এটি ডিজিটাল সিস্টেম এবং কম্পিউটারে সংখ্যার ইনপুট, আউটপুট, এবং গাণিতিক অপারেশন সহজে সম্পাদন করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

BCD (Binary-Coded Decimal) এর বৈশিষ্ট্য:

১. ডিজিট-ওরিয়েন্টেড পদ্ধতি:

  • BCD পদ্ধতিতে প্রতিটি দশমিক সংখ্যা (০ থেকে ৯) একটি ৪-বিট বাইনারি সংখ্যা (নিবল) হিসেবে প্রকাশ করা হয়।
  • উদাহরণ: দশমিক সংখ্যা ৫ হলো BCD পদ্ধতিতে 0101 এবং ৯ হলো 1001।

২. আলাদা ডিজিট এনকোডিং:

  • প্রতিটি দশমিক ডিজিটকে আলাদা করে বাইনারি আকারে এনকোড করা হয়। এইভাবে, বড় সংখ্যাকে আলাদা ডিজিটে বিভক্ত করে বাইনারি রূপান্তর করা যায়।
  • উদাহরণ: দশমিক সংখ্যা 25 BCD পদ্ধতিতে হবে 0010 0101 (২ এবং ৫ আলাদাভাবে এনকোড করা হয়েছে)।

৩. সহজ এবং সরল গাণিতিক অপারেশন:

  • BCD পদ্ধতিতে গাণিতিক অপারেশন সহজ, কারণ প্রতিটি দশমিক সংখ্যাকে আলাদা করে বাইনারি আকারে এনকোড করা হয়েছে। তাই গাণিতিক কাজ করার সময় প্রতিটি ডিজিট সরাসরি প্রক্রিয়াকরণ করা যায়।
  • এটি বিশেষ করে প্রাথমিক ডিজিটাল ক্যালকুলেটর এবং মাইক্রোকন্ট্রোলারগুলোতে ব্যবহৃত হয়, যেখানে সংখ্যাগুলোর দশমিক ফর্ম বজায় রেখে কাজ করা প্রয়োজন।

BCD পদ্ধতির উদাহরণ:

ধরা যাক, আমাদের দশমিক সংখ্যা 345 কে BCD পদ্ধতিতে রূপান্তর করতে হবে:

  • 3 এর বাইনারি কোড: 0011
  • 4 এর বাইনারি কোড: 0100
  • 5 এর বাইনারি কোড: 0101

তাহলে, BCD কোড হবে: 0011 0100 0101

BCD পদ্ধতির সুবিধা:

১. সহজ এনকোডিং এবং ডিকোডিং:

  • BCD পদ্ধতিতে দশমিক সংখ্যাগুলি সরাসরি বাইনারি কোডে রূপান্তর করা যায়, তাই ইনপুট এবং আউটপুট প্রক্রিয়াকরণ সহজ হয়।

২. ডিজিটাল ডিসপ্লে এবং ক্যালকুলেটরের জন্য উপযোগী:

  • ডিজিটাল ক্যালকুলেটর এবং ডিসপ্লেতে BCD পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, কারণ এতে সংখ্যাগুলোর প্রতিটি ডিজিট আলাদাভাবে প্রক্রিয়াকরণ করা যায় এবং ডিসপ্লেতে প্রদর্শন করা সহজ হয়।

৩. কম্পিউটার সিস্টেমের নির্ভুলতা বজায় রাখা:

  • BCD পদ্ধতিতে প্রতিটি দশমিক সংখ্যা আলাদাভাবে সংরক্ষণ করা হয়, তাই ত্রুটি বা সংখ্যা হেরফেরের সম্ভাবনা কম থাকে।

BCD পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা:

১. বেশি মেমোরি ব্যবহার:

  • BCD পদ্ধতিতে প্রতিটি দশমিক ডিজিটকে ৪-বিট হিসেবে সংরক্ষণ করা হয়, যা অনেক বেশি মেমোরি ব্যবহার করে। উদাহরণস্বরূপ, একটি ৮-বিট বাইনারি সংখ্যা ০ থেকে ২৫৫ পর্যন্ত মান ধারণ করতে পারে, কিন্তু BCD পদ্ধতিতে এটি মাত্র ০ থেকে ৯৯ পর্যন্ত মান ধারণ করতে পারে।

২. অপ্টিমাইজড নয়:

  • গাণিতিক অপারেশন BCD পদ্ধতিতে ডিজিট বাই ডিজিট সম্পাদন করা হয়, যা অন্যান্য বাইনারি অপারেশনের তুলনায় ধীর হতে পারে।

৩. বিকল্প পদ্ধতি বিদ্যমান:

  • আধুনিক ডিজিটাল সিস্টেমে BCD পদ্ধতির পরিবর্তে, পিওর বাইনারি এবং অন্যান্য এনকোডিং পদ্ধতি (যেমন, IEEE-754) ব্যবহৃত হয়, যা বেশি কার্যকর এবং কম মেমোরি খরচ করে।

BCD পদ্ধতির ব্যবহার:

  • ডিজিটাল ক্যালকুলেটর: দশমিক সংখ্যার সঙ্গে কাজ করার জন্য BCD পদ্ধতি উপযোগী। এটি ইনপুট এবং আউটপুট উভয় ক্ষেত্রেই সহজে ব্যবহার করা যায়।
  • ডিজিটাল ঘড়ি: সময় প্রদর্শনের জন্য BCD পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, কারণ এতে প্রতিটি সংখ্যার ডিজিটকে আলাদাভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
  • মাইক্রোকন্ট্রোলার এবং এম্বেডেড সিস্টেম: বিশেষত, যেখানে নির্দিষ্ট দশমিক সংখ্যার সঙ্গে কাজ করতে হয়, সেখানে BCD পদ্ধতি কার্যকরী।

সারসংক্ষেপ:

BCD (Binary-Coded Decimal) হলো একটি সংখ্যার এনকোডিং পদ্ধতি, যা দশমিক সংখ্যাগুলিকে ৪-বিট বাইনারি আকারে এনকোড করে। এটি সহজ এবং সরল, বিশেষ করে ডিজিটাল ডিসপ্লে এবং ক্যালকুলেটরের জন্য উপযোগী। তবে এর মেমোরি ব্যবহারের সীমাবদ্ধতার কারণে আধুনিক ডিজিটাল সিস্টেমে পিওর বাইনারি এবং অন্যান্য পদ্ধতির বেশি ব্যবহার দেখা যায়।

Content added By
Content updated By

ASCII

আসকি (American Standard Code for Information Interchange) হলো একটি ক্যারেক্টার এনকোডিং স্ট্যান্ডার্ড, যা কম্পিউটারে টেক্সট উপস্থাপন এবং যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হয়। ASCII প্রথমবারের মতো ১৯৬৩ সালে চালু হয় এবং এটি মূলত ইংরেজি অক্ষর, সংখ্যা, এবং সাধারণ প্রতীকগুলিকে বাইনারি ফরম্যাটে এনকোড করতে সাহায্য করে, যা কম্পিউটার সহজে বুঝতে এবং প্রসেস করতে পারে।

ASCII-এর বৈশিষ্ট্যসমূহ:

১. ৭-বিট এনকোডিং:

  • ASCII মূলত ৭-বিট এনকোডিং স্ট্যান্ডার্ড, যা ১২৮টি ভিন্ন ক্যারেক্টার এনকোড করতে সক্ষম (০ থেকে ১২৭ পর্যন্ত)।
  • এতে ৩৩টি কন্ট্রোল ক্যারেক্টার (যেমন নিউ লাইন, ক্যারেজ রিটার্ন, ট্যাব) এবং ৯৫টি প্রিন্টেবল ক্যারেক্টার (যেমন সংখ্যা, বড় এবং ছোট হাতের ইংরেজি বর্ণমালা, এবং বিভিন্ন প্রতীক) অন্তর্ভুক্ত থাকে।

২. ৮-বিট এক্সটেন্ডেড ASCII:

  • পরবর্তীতে, ৮-বিট ASCII (যাকে এক্সটেন্ডেড ASCII বলা হয়) চালু করা হয়, যা মোট ২৫৬টি ক্যারেক্টার এনকোড করতে সক্ষম। এটি অন্যান্য ভাষার বিশেষ অক্ষর এবং গ্রাফিক সিম্বল অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ব্যবহৃত হয়।

ASCII টেবিলের প্রধান বিভাগ:

১. কন্ট্রোল ক্যারেক্টার (০-৩১):

  • এই ক্যারেক্টারগুলো প্রিন্টেবল নয় এবং টেক্সটের ফরম্যাটিং বা ডেটা প্রসেসিংয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। যেমন:
    • NULL (0): কোনো মান নেই।
    • BEL (7): বীপ শব্দ তৈরি করে।
    • LF (10): লাইন ফিড, যা নতুন লাইন তৈরি করে।

২. স্পেস এবং প্রিন্টেবল ক্যারেক্টার (৩২-১২৭):

  • এই ক্যারেক্টারগুলোতে স্পেস, সংখ্যা (০-৯), বড় এবং ছোট হাতের ইংরেজি বর্ণমালা (A-Z, a-z), এবং বিভিন্ন প্রতীক (যেমন !, @, #, $, %, &, *, এবং আরও) অন্তর্ভুক্ত থাকে।

৩. এক্সটেন্ডেড ASCII (১২৮-২৫৫):

  • এই অংশে অন্যান্য ভাষার বিশেষ অক্ষর (যেমন ইউরোপীয় ভাষার বর্ণমালা), গ্রাফিক সিম্বল, এবং কিছু বিশেষ ফাংশন ক্যারেক্টার অন্তর্ভুক্ত থাকে।

ASCII-এর ব্যবহার:

১. টেক্সট ফাইল:

  • ASCII কোডের মাধ্যমে টেক্সট ফাইল তৈরি এবং সংরক্ষণ করা হয়। এটি সাধারণত .txt ফাইল হিসেবে পরিচিত।

২. প্রোটোকল এবং নেটওয়ার্কিং:

  • নেটওয়ার্ক প্রোটোকল, যেমন HTTP এবং FTP, ASCII কোড ব্যবহার করে ডেটা বিনিময় করে।

৩. প্রোগ্রামিং:

  • ASCII প্রোগ্রামিং ভাষা, যেমন C, Python, এবং অন্যান্য ভাষায় ব্যবহৃত হয়, যেখানে টেক্সট এবং স্ট্রিং ম্যানিপুলেশন করা হয়।

ASCII টেবিলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্যারেক্টার:

ASCII কোডক্যারেক্টারবিবরণ
32(Space)স্পেস
48-570-9সংখ্যা
65-90A-Zবড় হাতের বর্ণমালা
97-122a-zছোট হাতের বর্ণমালা
10LFলাইন ফিড (নতুন লাইন)
13CRক্যারেজ রিটার্ন

ASCII-এর গুরুত্ব:

  • ইন্টারঅপারেবিলিটি: ASCII একটি স্ট্যান্ডার্ড ফরম্যাট হওয়ায় এটি বিভিন্ন কম্পিউটার সিস্টেম এবং ডিভাইসের মধ্যে ডেটা বিনিময় করতে সহায়ক।
  • সহজ ব্যবহার: ASCII টেবিল সহজ এবং সবার জন্য বোঝার উপযোগী, যা প্রোগ্রামিং এবং ডেটা প্রসেসিং সহজ করে।
  • প্রাথমিক স্ট্যান্ডার্ড: ASCII আধুনিক ইউনিকোড স্ট্যান্ডার্ডের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে, যা বিভিন্ন ভাষার অক্ষর এবং প্রতীকের জন্য ব্যবহৃত হয়।

ASCII-এর সীমাবদ্ধতা:

১. ভাষাগত সীমাবদ্ধতা:

  • ASCII মূলত ইংরেজি ভাষার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল, তাই এটি অন্যান্য ভাষার অক্ষর ও প্রতীক সাপোর্ট করতে পারে না। এক্সটেন্ডেড ASCII কিছু ভাষার সাপোর্ট দিলেও, এটি যথেষ্ট নয়।

২. অল্প ক্যারেক্টারের সমর্থন:

  • ASCII শুধুমাত্র ১২৮ বা সর্বাধিক ২৫৬টি ক্যারেক্টার সাপোর্ট করতে পারে, যা বর্তমান সময়ের বহুভাষিক এবং জটিল সিস্টেমের জন্য অপ্রতুল।

ইউনিকোডের দিকে যাত্রা:

ASCII-এর সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠার জন্য ইউনিকোড চালু করা হয়, যা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষার অক্ষর এবং প্রতীক সাপোর্ট করে। ইউনিকোডে লক্ষাধিক ক্যারেক্টার এনকোড করা সম্ভব, যা আধুনিক সফটওয়্যার এবং ইন্টারনেটের জন্য একটি কার্যকর সমাধান।

সারসংক্ষেপ: ASCII হলো একটি প্রাথমিক ক্যারেক্টার এনকোডিং সিস্টেম যা ইংরেজি ভাষার অক্ষর, সংখ্যা, এবং প্রতীক এনকোড করতে ব্যবহৃত হয়। যদিও এটি সীমাবদ্ধ, তবুও এটি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং ইন্টারনেটের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

Content added By
Content updated By

ANSI

ANSI কোড বলতে আমরা স্ট্যান্ডার্ড এনকোডিং বোধ করি, যা হল আমেরিকান ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইনস্টিটিউট (ANSI) দ্বারা প্রকাশিত একটি স্ট্যান্ডার্ড কোড। এটি ইউনিকোড না হলেও, একটি পুরাতন স্ট্যান্ডার্ড কোড হিসাবে ব্যবহৃত হয় যা অধিকাংশ সিস্টেমে সমর্থিত হয়।

ANSI কোড একটি 8-বিট কোডিং সিস্টেম যা ইংরেজি অক্ষর, সংখ্যা, প্রতীক এবং সাধারণ পাঁচালী চিহ্ন সহ অন্যান্য স্থানীয় ভাষার ক্যারেক্টারগুলি কোড করে। 

Content added By

Unicode

ইউনিকোড (Unicode) হলো একটি আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড যা কম্পিউটারে বিভিন্ন ভাষার এবং লেখার সিস্টেমের চরিত্র এবং প্রতীকগুলিকে একটি একক এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ কোড পয়েন্টের মাধ্যমে উপস্থাপন করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এটি বিশ্বের সব ভাষার এবং স্ক্রিপ্টের জন্য একটি বৈশ্বিক সংকেত পদ্ধতি প্রদান করে, যার ফলে বিভিন্ন ভাষার লেখা এবং ডিজিটাল ডেটার সমন্বয় সম্ভব হয়।

Unicode এর বৈশিষ্ট্য:

বৈশ্বিক ভাষা সমর্থন: Unicode বিশ্বের প্রায় সমস্ত লেখার সিস্টেম, যেমন ল্যাটিন, আরবি, সেরিফ, কিরিলিক, হিন্দি, চীনা, জাপানি ইত্যাদির জন্য কোড পয়েন্ট সরবরাহ করে।

একক কোড পয়েন্ট: Unicode প্রতিটি চরিত্রকে একটি অনন্য কোড পয়েন্ট প্রদান করে। এই কোড পয়েন্টগুলি সাধারণত হেক্সাডেসিমাল সংখ্যায় উপস্থাপিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ইংরেজি "A" এর Unicode কোড পয়েন্ট হলো U+0041।

বিভিন্ন ফরম্যাট: Unicode বিভিন্ন এনকোডিং ফরম্যাটে উপলব্ধ, যেমন UTF-8, UTF-16, এবং UTF-32। UTF-8 সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং এটি ASCII-এর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

ইনক্রিমেন্টাল আভেদ: Unicode চরিত্রগুলি বিভিন্ন ভাষার এবং সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করতে পারে, যার ফলে এটি একটি আন্তর্জাতিক এবং আন্তঃসংস্কৃতি সমর্থনকারী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে।

Unicode এর ইতিহাস:

  • Unicode এর প্রথম সংস্করণ ১৯৯১ সালে প্রকাশিত হয়েছিল এবং এটি সময়ের সাথে সাথে বিভিন্ন ভাষার এবং চরিত্রের সমর্থন বাড়ানোর জন্য আপডেট করা হয়েছে।
  • Unicode Consortium নামক একটি সংগঠন এই স্ট্যান্ডার্ডের উন্নয়ন এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দায়ী।

Unicode এর উপকারিতা:

মাল্টি-ল্যাঙ্গুয়েজ সমর্থন: Unicode বিভিন্ন ভাষার ও লেখার সিস্টেমকে একসাথে কাজ করার সুযোগ দেয়, যা বৈশ্বিক যোগাযোগকে সহজতর করে।

সামঞ্জস্য: Unicode ব্যবহারে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম এবং ডিভাইসে পাঠ্য একইভাবে প্রদর্শিত হয়, যা ব্যবহারের অভিজ্ঞতা উন্নত করে।

ডেটা সংরক্ষণ: Unicode ব্যবহার করে বিভিন্ন ভাষার তথ্য এবং ডেটা সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়, যা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে এবং গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ।

Unicode এর ব্যবহার:

ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশন: Unicode ব্যবহার করে ওয়েব ডেভেলপাররা বিভিন্ন ভাষার সমর্থনসহ মাল্টি-ল্যাঙ্গুয়েজ ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন।

ডেটাবেস: Unicode ডেটাবেসে বিভিন্ন ভাষার এবং চরিত্রের ডেটা সঠিকভাবে সংরক্ষণ এবং পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।

মোবাইল ডিভাইস: স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেটের মতো ডিভাইসে Unicode ব্যবহার করে বিভিন্ন ভাষার লেখা সহজে প্রবাহিত করা যায়।

সারসংক্ষেপ:

Unicode একটি শক্তিশালী এবং বহুমুখী কোডিং সিস্টেম, যা বিশ্বের সব ভাষার এবং লেখার সিস্টেমের চরিত্রগুলিকে একটি একক ফর্ম্যাটে উপস্থাপন করে। এটি বৈশ্বিক যোগাযোগ এবং তথ্য প্রযুক্তিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যা ব্যবহারকারীদের জন্য বিভিন্ন ভাষার লেখাকে সঠিকভাবে পরিচালনা এবং প্রদর্শন করার সুযোগ দেয়।

Content added By
Content updated By

EBCDIC

ইবিসিডিআইসি (EBCDIC): ইবিসিডিআইসি (EBCDIC)-এর পূর্ণ অর্থ হচ্ছে এক্সটেন্ডেড বাইনারি কোডেড ডেসিমাল ইনফরমেশন কোড (Extended Binary Coded Decimal Information Code)। বিশ্ব বিখ্যাত আইবিএম কোম্পানী তাদের নিজস্ব কম্পিউটারে ব্যবহারের জন্য এই কোড উদ্ভাবন করেছে। এটি ৮ বিটের কোড, যার ডান দিকের ৪টি এবং ৪ বিটের মধ্যে মাঝের ৩ বিট হলাে জোনাল বিট এবং সর্ব বামের বিটটি প্যারাটি বিট হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

EBCDIC এর বৈশিষ্ট্য:

১. ৮-বিট এনকোডিং:

  • EBCDIC ৮-বিটের এনকোডিং পদ্ধতি ব্যবহার করে, যার ফলে ২৫৬টি আলাদা চরিত্র এনকোড করা যায়। এর মধ্যে ৬৪টি নিয়ন্ত্রণ চরিত্র, ৬৪টি অক্ষর, এবং ১২৮টি অক্ষর এবং সংখ্যা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

২. ডিজিটাল সিস্টেমে ব্যবহার:

  • EBCDIC বেশিরভাগ IBM মেইনফ্রেম সিস্টেমে ব্যবহৃত হয়। এটি বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার, বিশেষ করে ব্যাংকিং এবং ব্যবসায়িক অ্যাপ্লিকেশনে ব্যবহৃত হয়।

৩. অভিন্ন চরিত্র সেট:

  • EBCDIC বিভিন্ন ধরনের অক্ষর, যেমন ইংরেজি অক্ষর, সংখ্যা, এবং বিভিন্ন প্রতীকের জন্য আলাদা কোড প্রদান করে। উদাহরণস্বরূপ, A চরিত্রটির কোড 11000001 এবং 0 এর কোড 00110000।

EBCDIC এর উদাহরণ:

EBCDIC কোডে কিছু জনপ্রিয় অক্ষরের এনকোডিং:

  • A = 11000001
  • B = 11000010
  • 0 = 00110000
  • 1 = 00110001
  • SPACE = 00100000

EBCDIC এর ব্যবহার:

  • ব্যাংকিং এবং ফিনান্স: EBCDIC বেশিরভাগ ব্যাংকিং সিস্টেমে ব্যবহৃত হয়, যেখানে ডেটা নিরাপত্তা এবং সঠিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • মেইনফ্রেম কম্পিউটিং: IBM মেইনফ্রেম কম্পিউটারে EBCDIC ব্যবহৃত হয়, বিশেষ করে যেখানে পুরানো সিস্টেমগুলোর সাথে সামঞ্জস্য বজায় রাখা প্রয়োজন।

EBCDIC এর সীমাবদ্ধতা:

১. অসংখ্যাকৃত:

  • EBCDIC অনেক আধুনিক ডিজিটাল সিস্টেমের সাথে অসংখ্যাকৃত, যা ASCII (American Standard Code for Information Interchange) এর তুলনায় ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি করে। ASCII এখন আরও বেশি প্রচলিত এবং সমর্থিত।

২. বিভিন্ন সংস্করণ:

  • EBCDIC এর বিভিন্ন সংস্করণ ও প্রকারভেদ রয়েছে, যা কিছু ক্ষেত্রে অসঙ্গতি সৃষ্টি করতে পারে।

৩. ক্যারেক্টার সেটের সীমাবদ্ধতা:

  • EBCDIC এর কিছু সংস্করণে আন্তর্জাতিক চরিত্র এবং সিম্বলগুলোর জন্য পর্যাপ্ত স্থান না থাকার কারণে আন্তর্জাতিক ব্যবহার সীমিত হতে পারে।

সারসংক্ষেপ:

EBCDIC হলো একটি ৮-বিট এনকোডিং পদ্ধতি যা মূলত IBM দ্বারা তৈরি হয়েছে এবং মেইনফ্রেম কম্পিউটারে ব্যবহৃত হয়। যদিও এটি কিছু ক্ষেত্রে কার্যকরী এবং ব্যবহৃত হয়, তবে আধুনিক কম্পিউটার সিস্টেমের সাথে তুলনায় ASCII এর ব্যবহার বেশি প্রচলিত। EBCDIC বিশেষ করে ব্যাংকিং এবং পুরানো সিস্টেমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তবে এর সীমাবদ্ধতা এবং অসঙ্গতি আধুনিক প্রযুক্তিতে কিছু সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

Content added By
Content updated By

বাইনারি গণিত- Binary Math

বাইনারি গণিত (Binary Math) হলো সেই গণনার একটি প্রক্রিয়া, যা বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করে সম্পন্ন হয়। বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি ০ এবং ১ ব্যবহার করে সংখ্যা উপস্থাপন করে, যা ডিজিটাল কম্পিউটার এবং ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ভিত্তি। বাইনারি গণিতের মূল গাণিতিক অপারেশনগুলো হলো যোগ, বিয়োগ, গুণ, এবং ভাগ।

বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি:

  • বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি হলো একটি ভিত্তি-২ সংখ্যা পদ্ধতি, যেখানে মাত্র দুটি সংখ্যা (০ এবং ১) ব্যবহৃত হয়।
  • বাইনারি সংখ্যাগুলি কম্পিউটারে সমস্ত তথ্য, যেমন অক্ষর, চিত্র, এবং সাউন্ড ফাইল সংরক্ষণ এবং প্রক্রিয়াকরণের জন্য ব্যবহৃত হয়।

বাইনারি গণনার গাণিতিক অপারেশন:

নিচে বাইনারি গণিতের কিছু মৌলিক অপারেশন এবং তাদের উদাহরণ দেওয়া হলো:

১. বাইনারি যোগ (Binary Addition):

  • বাইনারি যোগে, সংখ্যা যোগ করার সময় ফলস্বরূপ ০, ১, বা ২ আসতে পারে। যদি দুটি ১ যোগ হয়, তবে আমরা ০ লিখি এবং ক্যারি ১ নিয়ে যাই।
ABResultCarry
0000
0110
1010
1101

উদাহরণ:

   1011
+  1101
-------
  11000

বিশ্লেষণ:

  • ১ + ১ = ০ (ক্যারি ১)
  • ১ + ০ + ১ (ক্যারি) = ০ (ক্যারি ১)
  • ০ + ১ + ১ (ক্যারি) = ০ (ক্যারি ১)
  • ১ + ১ (ক্যারি) = ১

২. বাইনারি বিয়োগ (Binary Subtraction):

  • বাইনারি বিয়োগে, যদি বিয়োগ করার সংখ্যা বড় হয় তবে আমরা ১ ধার করি।
ABResultBorrow
0000
0111
1010
1100

উদাহরণ:

   1100
-  0101
-------
   0111

বিশ্লেষণ:

  • ০ থেকে ১ বিয়োগ করতে হলে ১ ধার করতে হবে, ফলে ১ (বিয়োগের জন্য) এবং ০ (বিয়োগের ফলাফল)।
  • ১ - ১ = ০।
  • ১ - ০ = ১।

৩. বাইনারি গুণন (Binary Multiplication):

  • বাইনারি গুণনে ০ এবং ১ এর মধ্যে গুণফল পাওয়া যায়।
ABResult
000
010
100
111

উদাহরণ:

   101
×  110
-------
   000   (101 × 0)
  101    (101 × 1, শিফট ১ জায়গা)
+1010   (101 × 1, শিফট ২ জায়গা)
-------
  11110

৪. বাইনারি ভাগ (Binary Division):

  • বাইনারি ভাগ করার প্রক্রিয়া দশমিক সংখ্যা ভাগ করার মতোই, তবে এখানে ০ এবং ১ ব্যবহার করা হয়।

উদাহরণ:

   1101 (13 in decimal)
÷  11  (3 in decimal)
-------
   01  (1 in decimal, quotient)

বিশ্লেষণ:

  • ১১ (৩) থেকে ১টি ১১ (৩) বের করলে ০ হয়, যা ক্যারি করে ১০ (২) এবং এর মধ্যে ১টি ১১ বের করে ১।

সারসংক্ষেপ:

বাইনারি গণিত ডিজিটাল কম্পিউটারের ভিত্তি এবং এটি কম্পিউটারের মধ্যে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং সংগঠনের জন্য অপরিহার্য। বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি এবং গণনার মৌলিক অপারেশনগুলি ডিজিটাল প্রযুক্তির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।

Content added By
Content updated By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

অক্টাল গণিত- Octal Math

অক্টাল গণিত (Octal Math) হলো একটি সংখ্যা পদ্ধতি যা ভিত্তি ৮ ব্যবহার করে। অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতিতে সংখ্যা ০ থেকে ৭ পর্যন্ত ধারা থাকে। অর্থাৎ, অক্টাল গণিতের জন্য, ৮-এর পরিবর্তে ১০-এর সংখ্যা ব্যবহৃত হয়, যেখানে ৮ সংখ্যা হিসেবে গণ্য হয় না। অক্টাল গণিত মূলত কম্পিউটিং এবং তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়, বিশেষত বাইনারি এবং হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতির মধ্যে রূপান্তর করার সময়।

অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতির মৌলিক ধারণা:

  1. সংখ্যা: অক্টাল সংখ্যা ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭ পর্যন্ত হয়।
  2. সংখ্যার মান: অক্টাল সংখ্যা প্রতিটি বিটের অবস্থান ৮-এর শক্তির মাধ্যমে গণনা করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, অক্টাল সংখ্যা 25 হল:
    • 2×81+5×80=16+5=212 \times 8^1 + 5 \times 8^0 = 16 + 5 = 212×81+5×80=16+5=21 (ডেসিমাল)

অক্টাল গণনা কার্যক্রম:

১. অক্টাল যোগ (Addition):

অক্টাল সংখ্যার যোগ করার সময়, ৮-এর ভিত্তিতে গণনা করতে হয়। যদি যোগফল ৮ বা তার বেশি হয়, তাহলে ১ অবশিষ্ট রাখার পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয়।

উদাহরণ:

  57  (অক্টাল)
+ 34  (অক্টাল)
------
  113 (অক্টাল)

ব্যাখ্যা:

  • 7 + 4 = 11 (অক্টাল), যা 1 অবশিষ্ট রেখে 1। (এটি 1 × 8^0 + 3 × 8^0)
  • 5 + 3 + 1 (অবশিষ্ট) = 11 (অক্টাল)

২. অক্টাল বিয়োগ (Subtraction):

অক্টাল বিয়োগ করার সময়, ঋণাত্মক ফলের জন্য ১ ধার্য করতে হবে।

উদাহরণ:

  76  (অক্টাল)
- 34  (অক্টাল)
------
  42  (অক্টাল)

ব্যাখ্যা:

  • 6 - 4 = 2
  • 7 - 3 = 4

৩. অক্টাল গুণ (Multiplication):

অক্টাল গুণ করার সময়, সাধারণ গুণনের মতোই কাজ করা হয়, কিন্তু ফলাফল ৮-এর ভিত্তিতে রূপান্তর করতে হয়।

উদাহরণ:

  23  (অক্টাল)
×  5  (অক্টাল)
------
 115  (অক্টাল)

ব্যাখ্যা:

  • 3 × 5 = 15 (অক্টাল), যা 1 অবশিষ্ট রেখে 7।
  • 2 × 5 + 1 (অবশিষ্ট) = 11 (অক্টাল)

৪. অক্টাল ভাগ (Division):

অক্টাল ভাগ করার সময়, ভাগফল এবং অবশিষ্ট উভয়কেই ৮-এর ভিত্তিতে গণনা করতে হবে।

উদাহরণ:

  75  (অক্টাল)
÷  5  (অক্টাল)
------
  15  (অক্টাল)

ব্যাখ্যা:

  • 7 ÷ 5 = 1, অবশিষ্ট 2 (৭ থেকে ৫ বাদ দিলে ২).
  • 25 ÷ 5 = 5, তাই 25 (অক্টাল) ভাগফল 15 (অক্টাল) হবে।

অক্টাল থেকে অন্য সংখ্যা পদ্ধতিতে রূপান্তর:

অক্টাল সংখ্যাকে ডেসিমাল, বাইনারি বা হেক্সাডেসিমালে রূপান্তর করতে প্রয়োজনীয় পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।

অক্টাল থেকে ডেসিমাল:

প্রতি বিটের মান গণনা করতে হবে এবং ৮-এর শক্তি ব্যবহার করতে হবে।

উদাহরণ: অক্টাল 72 কে ডেসিমালে রূপান্তর করা:

7 × 8^1 + 2 × 8^0 = 56 + 2 = 58

অক্টাল থেকে বাইনারি:

প্রতি অক্টাল সংখ্যাকে ৩ বিট বাইনারিতে রূপান্তর করতে হয়।

উদাহরণ: অক্টাল 5 কে বাইনারিতে রূপান্তর করা:

5 = 101 (বাইনারি)

সারসংক্ষেপ:

অক্টাল গণিত সহজ এবং কার্যকর, তবে এর জন্য ৮-এর ভিত্তিতে গণনা করার দক্ষতা প্রয়োজন। এটি বিভিন্ন প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে, বিশেষ করে কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং ইলেকট্রনিক্সে প্রায়ই ব্যবহৃত হয়।

Content added By

হেক্সাডেসিমাল গণিত- Hexadecimal

হেক্সাডেসিমাল গণিত হলো একটি সংখ্যা পদ্ধতি যা ভিত্তি ১৬ ব্যবহার করে। এই পদ্ধতিতে সংখ্যা ০ থেকে ৯ এবং A (10), B (11), C (12), D (13), E (14), F (15) পর্যন্ত থাকে। হেক্সাডেসিমাল পদ্ধতি সাধারণত কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রোগ্রামিংয়ে ব্যবহৃত হয়, কারণ এটি বাইনারি সংখ্যাকে আরও সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করতে সহায়ক।

হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতির মৌলিক ধারণা:

  1. সংখ্যা: হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, A, B, C, D, E, F পর্যন্ত হয়।
  2. সংখ্যার মান: হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা প্রতিটি বিটের অবস্থান ১৬-এর শক্তির মাধ্যমে গণনা করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা 2A হল:
    • 2 × 161 + 10 × 160 = 32 + 10 = 42 (ডেসিমাল)

হেক্সাডেসিমাল গণনা কার্যক্রম:

১. হেক্সাডেসিমাল যোগ (Addition):

হেক্সাডেসিমাল সংখ্যার যোগ করার সময়, ১৬-এর ভিত্তিতে গণনা করতে হয়। যদি যোগফল ১৬ বা তার বেশি হয়, তাহলে ১ অবশিষ্ট রাখতে হয়।

উদাহরণ:

  1A  (হেক্সাডেসিমাল)
+ 2B  (হেক্সাডেসিমাল)
------
  45  (হেক্সাডেসিমাল)

ব্যাখ্যা:

  • A (10) + B (11) = 21 (হেক্সাডেসিমাল), যা 1 অবশিষ্ট রেখে 5।
  • 1 + 2 + 1 (অবশিষ্ট) = 4।

২. হেক্সাডেসিমাল বিয়োগ (Subtraction):

হেক্সাডেসিমাল বিয়োগ করার সময়, ঋণাত্মক ফলের জন্য ১ ধার্য করতে হবে।

উদাহরণ:

  3C  (হেক্সাডেসিমাল)
- 1A  (হেক্সাডেসিমাল)
------
  22  (হেক্সাডেসিমাল)

ব্যাখ্যা:

  • C (12) - A (10) = 2
  • 3 - 1 = 2

৩. হেক্সাডেসিমাল গুণ (Multiplication):

হেক্সাডেসিমাল গুণ করার সময়, সাধারণ গুণনের মতোই কাজ করা হয়, কিন্তু ফলাফল ১৬-এর ভিত্তিতে রূপান্তর করতে হয়।

উদাহরণ:

  1A  (হেক্সাডেসিমাল)
×  3  (হেক্সাডেসিমাল)
------
  51  (হেক্সাডেসিমাল)

ব্যাখ্যা:

  • A (10) × 3 = 30 (হেক্সাডেসিমাল), যা 1 অবশিষ্ট রেখে 0।
  • 1 × 3 + 1 (অবশিষ্ট) = 5।

৪. হেক্সাডেসিমাল ভাগ (Division):

হেক্সাডেসিমাল ভাগ করার সময়, ভাগফল এবং অবশিষ্ট উভয়কেই ১৬-এর ভিত্তিতে গণনা করতে হবে।

উদাহরণ:

  4A  (হেক্সাডেসিমাল)
÷  2  (হেক্সাডেসিমাল)
------
  26  (হেক্সাডেসিমাল)

ব্যাখ্যা:

  • 4 ÷ 2 = 2
  • A (10) ÷ 2 = 5, তাই 4A (হেক্সাডেসিমাল) ভাগফল 26 (হেক্সাডেসিমাল) হবে।

হেক্সাডেসিমাল থেকে অন্য সংখ্যা পদ্ধতিতে রূপান্তর:

হেক্সাডেসিমাল সংখ্যাকে ডেসিমাল, বাইনারি বা অক্টাল রূপান্তর করতে প্রয়োজনীয় পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।

হেক্সাডেসিমাল থেকে ডেসিমাল:

প্রতি বিটের মান গণনা করতে হবে এবং ১৬-এর শক্তি ব্যবহার করতে হবে।

উদাহরণ: হেক্সাডেসিমাল 1A কে ডেসিমালে রূপান্তর করা:

1 × 16^1 + 10 × 16^0 = 16 + 10 = 26

হেক্সাডেসিমাল থেকে বাইনারি:

প্রতি হেক্সাডেসিমাল সংখ্যাকে ৪ বিট বাইনারিতে রূপান্তর করতে হয়।

উদাহরণ: হেক্সাডেসিমাল A কে বাইনারিতে রূপান্তর করা:

A = 1010 (বাইনারি)

সারসংক্ষেপ:

হেক্সাডেসিমাল গণিত সহজ এবং কার্যকর, তবে এর জন্য ১৬-এর ভিত্তিতে গণনা করার দক্ষতা প্রয়োজন। এটি বিভিন্ন প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে, বিশেষ করে কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং ইলেকট্রনিক্সে প্রায়ই ব্যবহৃত হয়। এটি বাইনারি সংখ্যাকে আরও সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করতে সহায়ক এবং সাধারণত কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এবং ডিজিটাল ইলেকট্রনিক্সে ব্যবহৃত হয়।

Content added By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

সংখ্যা পদ্ধতির রূপান্তর- Number System Convert

আমরা সাধারণত যে সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করি তাকে বলা হয় দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি। কম্পিউটার যে সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করে তাকে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি বলে। এরকম আরো অনেক সংখ্যা পদ্ধতি আছে। 

নিচে কয়েকটি সংখ্যা পদ্ধতির নাম দেওয়া হল। 

1. দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি (০ থেকে ৯ পর্যন্ত)। 

2. বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি (০ এবং ১)। 

3. অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতি (০ থেকে ৭ পর্যন্ত)। 

4. হেক্স-ডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি (০ থেকে ১৬ পর্যন্ত- ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ০, A, B, C, D, E এবং F)। 

দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি 

আমরা জানি যে গণিত লেখা কিছু চিহ্ন বা সংখ্যার সাহায্যে করা হয়। যাইহোক, আমরা যে পদ্ধতিতে সংখ্যা লিখি তার উপর নির্ভর করে কতগুলো চিহ্ন বা সংখ্যা লেখা যাবে তা জানা যাই। আমরা সাধারণত যে পদ্ধতিতে সংখ্যা লিখি তাতে দশটি চিহ্ন বা অক্ষর ব্যবহার করা হয়, তাই একে দশমিক পদ্ধতি বলা হয়। অর্থাৎ, দশমিক পদ্ধতিতে ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, ০ দশটি সংখ্যা থাকে। এই পদ্ধতিতে লেখা সংখ্যার ভিত্তি হল ১০। 

বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি

০ এবং ১ এ দুই অঙ্কের সংখ্যা পদ্ধতিকে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি বলা হয়। বাইনারি হল সবচেয়ে সহজ সংখ্যা পদ্ধতি। এর ভিত্তি হল ২। ০ এবং ১ চিহ্ন দুটিকে গণিতের ভাষায় সংখ্যা বলা হয়। মাত্র দুটি চিহ্ন বা সংখ্যা দিয়ে সংখ্যা লেখার এই পদ্ধতি বাইনারি পদ্ধতি নামে পরিচিত। তাই এই দুটি সংখ্যাকে বাইনারি সংখ্যা বা বাইনারি অংক বলা হয়। কম্পিউটার বাইনারি সংখ্যার সাহায্যে সব ধরনের গণনা বা যেকোনো কাজ করে থাকে। বাইনারি সংখ্যা দ্বারা গঠিত কম্পিউটার ভাষাকে বাইনারি ভাষা বলে। 

অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতি 

বাইনারি সংখ্যাগুলিকে বেশ দীর্ঘ হয় তাই অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতির উদ্ভব হয়েছে যা এটিকে সহজ এবং সংক্ষিপ্ত আকারে উপস্থাপন করে। এই নম্বর সিস্টেমটি কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ বাইনারি সংখ্যাগুলি প্রক্রিয়া করতে ব্যবহৃত হয়। অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি হল আট। অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ৮টি সংখ্যা রয়েছে। এগুলি হল ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬ এবং ৭ যার মানে এখানে সবচেয়ে বড় সংখ্যা হল ৭। 

হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি 

কম্পিউটারে ব্যবহৃত আরেকটি সংখ্যা পদ্ধতিকে বলা হয় হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি। এই নম্বর সিস্টেমটি কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ বাইনারি সংখ্যাগুলি প্রক্রিয়া করতেও ব্যবহৃত হয়। হেক্সাডেসিমেল হল একটি ১৬ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে ১৬টি চিহ্ন, প্রতীক বা সংখ্যা রয়েছে। এগুলি হল ০, ১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯, A, B, C, D, E এবং F। নীচের টেবিলটি দশমিক সংখ্যার পাশাপাশি হেক্সাডেসিমেল সমতুল্য সংখ্যাগুলিও দেখানো হলো৷

 

দশমিক থেকে বাইনারি রূপান্তর 

আসুন এখন জানি কিভাবে একটি দশমিক সংখ্যাকে বাইনারি সংখ্যায় রূপান্তর করা যায়। দশমিককে বাইনারিতে রূপান্তর করার সবচেয়ে সহজ উপায় হল দশমিক সংখ্যাকে দুই দ্বারা ভাগ করা। এবং ভাগশেষগুলোকে পাশাপাশি সাজালেই সমতুল্য বাইনারি সংখ্যা পাওয়া যাবে। এখানে শেষ অবশিষ্ট সংখ্যাগুলোকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব সংখ্যা হিসেবে নেওয়া হয়েছে। উদাহরণ: চলুন ২৫ (দশমিক) সংখ্যাটিকে বাইনারিতে রূপান্তর করি।

ফলাফল ১১০০১(পঁচিশ) বাইনারি

 

বাইনারি থেকে দশমিকে রূপান্তর 

আমরা একটি সংখ্যার স্থানীয় মান দিয়ে গুণ করে তার মোট মান খুঁজে পেতে পারি। যেমন একক, দশক, শতাব্দী, স্থানীয় মান এইভাবে পাওয়া যাবে। তবে বাইনারি সংখ্যাগুলিকে তাদের স্থানীয় মানগুলিকে গুণ করে এবং প্রাপ্ত মানগুলি যোগ করে দশমিক সংখ্যায় রূপান্তর করা যেতে পারে। 

নীচে সংখ্যাটি ১১০০১ (বাইনারী পঁচিশ) দশমিক সংখ্যায় রূপান্তরিত হয়েছে।

আপনি যদি একটি বাইনারি সংখ্যার একটি ভগ্নাংশকে দশমিক সংখ্যায় রূপান্তর করতে চান, আপনি ফলাফলটিকে তার স্থানীয় মান দ্বারা গুণ করতে পারেন এবং গুণফলটিকে যোগ করলে দশমিক সমতুল্য সংখ্যা পারেন। উদাহরণস্বরূপ, আসুন .১০১০ সংখ্যাটিকে দশমিক সংখ্যায় রূপান্তর করি।

দশমিক থেকে অক্টাল সংখ্যায় রূপান্তর 

যেহেতু অক্টাল সংখ্যার ভিত্তি আট। সুতরাং যেকোনো দশমিক পূর্ণ সংখ্যাকে আট দ্বারা ভাগ করে অক্টাল সংখ্যায় রূপান্তর করা যেতে পারে। ভাগফল শূন্য না হওয়া পর্যন্ত পুনঃবন্টন করতে হবে এবং ভাগফলকে পাশাপাশি সাজিয়ে অক্টাল সংখ্যা পাওয়া যাবে। এখানে শেষ অংশটি সর্বোচ্চ গুক্তত্বের সংখ্যা হিসাবে বিবেচিত হবে। উদাহরণস্বরূপ, আসুন ৭৫ (দশমিক) সংখ্যাটিকে একটি অক্টাল সংখ্যায় রূপান্তর করি।

আপনি যদি একটি দশমিক ভগ্নাংশ সংখ্যাকে অক্টাল সংখ্যায় রূপান্তর করতে চান তবে আপনাকে সেই সংখ্যাটিকে আট দ্বারা গুণ করতে হবে এবং পূর্ণ সংখ্যাটি আলাদা করতে হবে। যদি গুণফলে ভগ্নাংশ থাকে তবে এটিকে আবার গুণ করতে হবে। সবশেষে, পূর্ণ সংখ্যাগুলো পাশাপাশি সাজানো হলে অক্টাল সংখ্যা পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে প্রথম পূর্ণ সংখ্যাটিকে সর্বোচ্চ গুক্তত্বে সংখ্যা হিসেবে ধরা হয়। উদাহরণস্বরূপ, আসুন ০.২৫ কে একটি অক্টাল সংখ্যায় রূপান্তর করি।

অক্টাল থেকে দশমিক সংখ্যায় রূপান্তর 

অক্টাল সংখ্যা একইভাবে তার স্থানীয় মান দ্বারা গুণিত করে এবং পরে গুণফল দ্বারা যোগ করলে দশমিক সংখ্যায় রূপান্তর হয়। নিচের উদাহরণটি লক্ষ্য করুন। ১১৩.১২ অক্টাল সংখ্যাটি দশমিক সংখ্যায় রূপান্তরিত।

দশমিক থেকে হেক্সাডেসিমেল সংখ্যায় রূপান্তর 

হেক্সাডেসিমেল সংখ্যার ভিত্তি হল ১৬। একটি পূর্ণ দশমিক সংখ্যাকে একটি হেক্সাডেসিমেল সংখ্যায় রূপান্তর করতে এটিকে ১৬ দ্বারা ভাগ করতে হবে। ভাগফলটি শূন্য না হওয়া পর্যন্ত পুনরায় ভাগ করতে হবে। সবশেষে, ভাগশেষসমূহ শেষ থেকে শুরুতে অবশিষ্টাংশকে বাছাই করলে হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পাওয়া যায়৷ ৫৫ দশমিক সংখ্যাকে হেক্সাডেসিমেল সংখ্যায় রূপান্তর করা যাক।

ফলাফল: ৩৭ (পঞ্চান্ন হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি)। 

আপনি যদি একটি দশমিক ভগ্নাংশ সংখ্যাকে হেক্সাডেসিমেল সংখ্যায় রূপান্তর করতে চান তবে আপনাকে পুনঃ পুনঃ ১৬ দ্বারা ভগ্নাংশকে গুণ করতে হবে। গুণফল থেকে প্রাপ্ত পূর্ণসংখ্যাগুলি পাশাপাশি সাজিয়ে হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পাওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, আসুন আমরা ০.৫০ সংখ্যাটিকে একটি হেক্সাডেসিমেল সংখ্যায় রূপান্তর করি।

ফলাফল: ০.৮ হেক্সাডেসিমেল

 

হেক্সাডেসিমেল থেকে দশমিক সংখ্যায় রূপান্তর 

হেক্সাডেসিমেল সংখ্যার ভিত্তি হল ১৬। আপনি যদি একটি হেক্সাডেসিমেল সংখ্যাকে দশমিক সংখ্যায় রূপান্তর করতে চান, আপনি সেই সংখ্যাটিকে তার স্থানীয় মান দ্বারা গুণ করতে পারেন এবং প্রাপ্ত সংখ্যাগুলি যোগ করলে দশমিক সংখ্যা পাবেন। 

A২.৮ কে হেক্সাডেসিমেল সংখ্যাকে দশমিক সংখ্যায় রূপান্তর।

Content added By

# বহুনির্বাচনী প্রশ্ন

Promotion